আমার দিদার মা নিভাননী ছিলেন অতি সাহসী মহিলা। ছয় ছেলেমেয়ে নিয়ে তার বিরাট সংসার, স্বামী থাকেন দূরে। তার ক্ষেত খামারে যে সব মুনিস, রাখাল, বাগাল সারাদিন ধরে কাজকর্ম করত, তারাই আবার সুযোগ বুঝে মালিকের বাড়ীতে চুরিও করত।
একদিন, গরমের রাত। নিভাননী, তার শোবার আগে, সমস্ত ঘরগুলিতে নজরদারি চালিয়ে নিয়েছেন, সিঁড়ির কোণাগুলো, সিঁড়ির নীচে ইত্যাদি সব জায়গায়। তারপর উনি যখন অভ্যাস মত তার পা দুটো খাটের পাশে রাখা পাপোশে মুছে, ছোটো সিঁড়ি দিয়ে বিশাল উঁচু পালঙ্কে উঠতে যাবেন, দেখেন, আলনার জামা কাপড়ের আড়ালে ও খাটের পাশে একটা মিশকালো শুঁটকো লোক পিছন ফিরে চুপ করে পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে, সেজের আলোয় কেউ ঠাহরই করতে পারবে না।
নিভাননীর ঠাণ্ডা মাথা, একফোঁটা ঘাবড়ালেন না। ঠিক করলেন, চোর ব্যাটাকে আগামী কাল এক্কেবারে অন্যভাবে ধরবেন। নিজের মনে কথা বলতে বলতে তিনি আয়েস করে পানের বাটা খুললেন, পান সাজলেন, অনেক সময় নিয়ে মুখে পান পুরে, গুনগুন করে গান গাইলেন, তারপর আস্তে করে আলনার দিকে গিয়ে শাড়ি বদলাবার অছিলায় চুন মাখা আঙ্গুল লোকটার পিঠে ঘসে দিলেন। চোর বাবাজী তো ভয়ের চটে আর মুখে রা কাড়ে নি। চুপচাপ বসেছিল। তারপর, নিভাননী পা মুছে খাটে উঠে আবার বইও পড়লেন সেজের বাতিতে তারপর গভীর নিদ্রায় তলিয়ে গেলেন। পরের দিন বাড়ীতে হইচই। বেশ কয়েকটা পিতলের বাসন খোয়া গেছে। নিভাননী ঠাণ্ডা মাথায় তার বড় ছেলেকে, সব মুনিসদের লাইন করে উঠোনে দাঁড়াতে বললেন। তারপর উনি নিজে বেরিয়ে এসে তাদের পিছন ফিরে দাঁড়াতে বললেন। তারা দাঁড়ানো মাত্র দেখা গেল, একজনের পিঠে চুনের দাগ। ব্যস! চোর বাবাজী ধরা পড়ল। নিভাননী তাকে অবশ্য ক্ষমা করে দিইয়েছিলেন। সে তখন দোষ স্বীকার করে বাসন পত্র ফেরত দিয়েছিল।
তবে চোর বাবাজী নিশ্চই চরম আশ্চর্য হয়েছিল নিভাননীর ঠাণ্ডা মাথা, সাহস এবং পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়া একজন জলজ্যান্ত চোর খাটের তলায় লুকিয়ে আছে জেনেও….
এ শুনে আমরা এটাকে কি বলব – Super duper confidence and women’s’ power!!
Darun sahosh to!! At the same time forgiving the person whom you saw to do the nuisance, something great about a rock solid personality, which we inherited in our blood… Geo Bangali…